ইন্টারভিউ
কখন, কেন মনে হয়েছিলো সিনেমা বানাবেন?
খুব ছোট্ট বসয়ে সত্যজিৎ রায় এর ‘গুপি গায়েন বাঘা বায়েন’ দেখতে দেখতে একদিন মনে হয়েছিলো “আমিও একদিন সিনেমা বানাবো”।
একটি সিনেমার পরিচালনা করা চারটে খানি কথা নয়, পরিচালনার অভিজ্ঞতা কিভাবে অর্জন হলো?
সিনেমা পরিচালনা আসলে অনুধাবনের বিষয়, এটা ভেতর থেকে আসে। সিনেমা নিয়ে পড়ছি, কখন কোন সিচুয়েশনে কোন সিনেমাট্যিক ল্যাঙ্গুজ ব্যাবহার করা দরকার তা জানছি। অসংখ্য সিনেমা দেখেছি, সিনেমার ক্ষেত্রে আমি সর্বভুখ মানে সব জনরার সিনেমা দেখে থাকি। সিনেমা পড়ে ও দেখে যা যা শিখেছি আমার সিনেমায় আমি সেভাবেই এ্যাপ্লাই করেছি। কেননা, এর আগে আমি কারো সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করি নি। তাই অন্য কারো প্রভাব আমার পরিচালনায় নেই। আমার মন এবং মস্তিষ্ক যেভাবে কাজ করতে বলেছে আমি সেভাবেই পরিচালনা করেছি!
এখনো স্নাতক সম্পন্ন করেননি অথচ একটি সিনেমা তৈরির কাজ শেষ করে ফেলেছেন, প্রথমবারের সফলতার আনন্দ ও প্রশান্তির জায়গাগুলো নিয়ে বলুন।
“কৃষ্ণপক্ষ – A Burning Soul” এর সাফল্য আমার কাছে কল্পনাতীত। আমি নিত্যান্তই অভিজ্ঞতা অর্জনের উদ্দেশ্যে এই এক্সপেরিমেন্টাল সিনেমাটা নির্মাণ করি। আমার সিনেমার প্রথম প্রদর্শনী হয় “একবিংশ ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব” এ ২১ জানুয়ারি জাতীয় জাদুঘরে। এই দিন থেকেই কৃষ্ণপক্ষের এক নতুন যাত্রা শুরু হয়। ২২ জানুয়ারি উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানে ঘোষণা হয় আমার কৃষ্ণপক্ষ “বাংলাদেশ প্যানোরামা- শর্ট ফিল্ম সেকশন” এ সেকেন্ড রানারআপ হয়েছে। অথচ এই সেকশনে আমার চেয়ে অনেক সিনিয়র নির্মাতা ও বাংলাদেশের অন্যতম বড় প্রোডাকশন হাউজ থেকে আসা সিনেমা ছিলো! আর এর মাঝে পৃথিবীর অন্যতম ফিল্ম ক্রিটিক জুরি “ফিপ্রেস্কি” আমাকে নির্বাচিত করেছে! পুরস্কার ঘোষণা করেন ও মঞ্চে ডেকে নেন বাংলাদেশের বিশিষ্ট ফিল্ম ক্রিটিক বিধান বিবেরু। আমার কাছে এই পুরো ঘটনা স্বপ্নের মতো। জীবনে প্রথমবার আমি অনুভব করি আনন্দ অশ্রু কেমন হয়!
এরপর কৃষ্ণপক্ষের ঝুলিতে আরো অনেক সাফল্য যুক্ত হয়েছে। জেএমসি মিডিয়া বাজ কর্তক ১৫মে অনুষ্ঠিত “ন্যাশনাল শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল” এ প্রথম রানারআপ হওয়া কৃষ্ণপক্ষের আরেকটি বড় সাফল্য।
সাম্প্রতি ভারতে অনুষ্ঠিত “ওয়ান লিফ ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল” কৃষ্ণপক্ষ – A Burning Soul চলচ্চিত্রটি তিনটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কৃত হয়েছে; বেস্ট বাঙালি ফিল্ম, বেস্ট কনসেপ্ট এবং বেস্ট ডিরেক্টর। আমেরিকার নিউজার্সিতে অনুষ্ঠিত” স্টুডেন্ট ওয়াল্ড ইম্প্যাক্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল” (১৮-১৫ জুন) এ কৃষ্ণপক্ষ – A Burning Soul চলচ্চিত্রটি ১২০ টি দেশের ১৩৮০০ চলচ্চিত্রের মাঝে কোয়ার্টার ফাইনালিস্ট নির্বাচিত হয়েছে।
এছাড়াও ১০টির অধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য কৃষ্ণপক্ষ – A Burning Soul অফিশিয়ালি সিলেক্টেড হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম – লন্ডনে অনুষ্ঠিত “রেইনবো ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল” (২৯ মে- ৪জুন), ইতালির মিলান শহরে অনুষ্ঠিত ” ডিউমিলান থার্টি” ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল (৯-১১ জুন), যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত “লিফ্ট অফ সিজন ২০২৩”, ভারতে অনুষ্ঠিত “পুনে শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল”(২৬-২৮ মে) । এত এত অর্জনের মাঝে দুটি বিশেষ অর্জন বা অনুপ্রেরণা আমি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পেয়েছি। ঢাকা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব এর বিজয়ী হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সম্মাননা স্মারক প্রদান করে৷ এবং আমার ডিপার্টমেন্ট থেকেও আরেকটি সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়।