কুমিল্লায় ডিম ব্যাবসায়ীদের খপ্পরে পড়ে আটকে গেলো অবৈধ কোল্ডস্টোরেজ মালিক রা। কুমিল্লা থেকে শাহজালাল ভুঁইয়া সজিব কুমিল্লায় বাচার পথ নেই অবৈধ কোল্ডস্টোরেজের মালিকদের। দীর্ঘদিন যাবত অবৈধ ভাবে ব্যাবসা চালিয়ে আসছিল অনিবন্ধিত কোল্ডস্টোরেজ মালিক চক্রের একটি সংঘবদ্ধ দল।কথায় বলে চোরের দশদিন মালিকের একদিন। ঠিক তেমনি ঘটে গেল কুমিল্লাতে। অবৈধ কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২১ লাখ পিস ডিমের অবৈধ মজুদ পাওয়ার পর জেলার সকল কোল্ডস্টোরেজ পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন কুমিল্লা জেলা প্রশাসক। কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বরল এলাকার একটি অনিবন্ধিত কোল্ডস্টোরেজে ২১ লাখ ডিমের অবৈধ মজুদের সন্ধান পাওয়া যায় প্রশাসন।দ্রুত জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় ভ্রাম্যমান করেন প্রশাসন।এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট ও কৃষি বিপনন কর্মকর্তা জানান, অবৈদ মুজদ করে বাজারে সঙ্কট সৃষ্টির জন্য এই মজুদ। জেলা প্রশাসক জানালেন, এমন আর কেউ করছে কি না খতিয়ে দেখতে জেলার সকল কোল্ডস্টোরেজগুলোতে নজরদারি করা হবে।
গত ১৯ মে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বরল এলাকায় মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে অভিযান পরিচালনা করে ভ্রাম্যমান আদালত। সেখানে গিয়ে মেলে, ২১ লাখ ডিমের অবৈধ মজুদ। কোল্ডস্টোরেজটিরও কোন নিবন্ধনের কাগজ দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। অনিয়ম ও অবৈধ মজুদদারির দায়ে মেঘনা কোল্ডস্টোরেজ নামে ওই প্রতিষ্ঠানকে দুই লাখ টাকা জরিমানা ও ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ডিম বাজারজাত করার নির্দেশ দেয় ভ্রাম্যমান আদালত। ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট জানান, বিপুল পরিমান ডিমের মুজদ অবৈধ। বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট তৈরী করতে এই মজুদদারি করা হয়েছিলো বলে দাবি কৃষি বিপনন কর্মকর্তার।
নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মেহেদী হাসান শাওন বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বরল এলাকার মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে অভিযান পরিচালনা করা হয়। কৃষি বিপনন আইন অনুযায়ী কোন কোল্ডস্টোরেজ পরিচালনা করতে হলে তার লাইসেন্স নিতে হবে- তারা সেটা করেনি বলে ১ লাখ টাকা জরিমানা। একই সাথে বাজার অস্থিরতা সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে এই ২১ লক্ষ ডিম মজুদ করে রাখার জন্য তাদেরকে আরো ১ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তাদেরকে ৪৮ ঘন্টা সময় দেয়া হয় এসব ডিম বাজারজাত করার জন্য। এজন্য অঙ্গীকারনামাও রাখা হয়।
সিনিয়র কৃষি বিপনন কর্মকর্তা মোঃ জাকারিয়া বলেন, মূলত মেঘনা কোল্ডস্টোরেজটি আলু সংরক্ষণাগার।কিছুদিন আগেও যখন বাজারে ডিমের দাম কম ছিলো, ৩৮/৪০ টাকা ছিলো হালি। ওই সময় তারা বিপুল পরিমান ডিম সংগ্রহ করে। আবার ডিমের যখন দাম বাড়ে – তখনও কিন্তু তারা ধরে রাখে। তার মানে তারা মজুদ করছিলো। এই বিপুল পরিমানে ডিম মজুদ আইনের বাইরে। কৃষি বিপনন আইনে বলা হয়েছে এধরনের মজুদ বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরীর জন্যই হয়ে থাকে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বলছে, এমন বিপুল পরিমান খাদ্য মজুদ আইন পরিপন্থী । স্থানীয় সকল কোল্ডস্টোরেজগুলো পরিদর্শন করেন কোথাও কোন অবৈধ মজুদ আছে কি না জানতে সকল নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সহকারী পরিচালক মোঃ আছাদুল ইসলাম জানান, যদি কোন ব্যবসায়ী এভাবে মজুদ করে সঙ্কট তৈরী করেন বাজারকে অস্থির করার চেষ্টা করেন- তা ভোক্তাদের উপর প্রভাব পরে। বাজারে সরবরাহ না থাকলেই তো দাম বাড়ে। বাজারে সরবরাহ না থাকার অন্যতম কারণ হতে পারে এমন কারসাজি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু. মুশফিকুর রহমান, প্রতিটি কোল্ডস্টোরেজে আইন অনুযায়ী পন্য রাখা হচ্ছে কি না মনিটরিং করা হচ্ছে। এই কারনেই এমন বড় একটি অবৈধ মজুদ ধরা পড়েছে। আমরা সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আওতাধীন কোল্ডস্টোরেজসহ গুদাম গুলো আছে সেগুলোতে কি ধরনের পন্য কি পরিমান গুদামজাত হচ্ছে তা নিয়মিত মনিটরিং করে তারা রিপোর্ট দিবেন।
মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে ২১ লাখ ডিমের অবৈধ মজুদ ছাড়াও সেখান থেকে ৮শ ড্রামে ২৪ হাজার কেজি মেয়াদোত্তীর্ণ মিষ্টিও জব্দ করে ভ্রাম্যমান আদালত।স্থানীয় দের সঙ্গে কথা বললে তারা জানান দেশের মানুষের কল্যানের জন্য সকল উপজেলা গুলো তে এভাবে অভিযান পরিচালনা করলে সবকিছু নিয়ন্ত্রণে আসবে।