নব্বইয়ের আলো, বর্তমানের প্রতিধ্বনি
—হুমায়ুন কবির চৌধুরী
ছবিটি শুধু একটি মুহূর্তের দলিল নয়—এটি নব্বই দশকের টেলিভিশন নাটকের সেই সোনালি সময়ের জীবন্ত স্মারক।
ছবির ফ্রেমে রয়েছেন—মুনীরা বেগম মেমী, সালাউদ্দিন লাভলু, আজিজুল হাকিম, জাহিদ হাসান, তৌকীর আহমেদ, শহীদুজ্জামান সেলিম এবং প্রখ্যাত আলোকচিত্রী রফিকুর রহমান রেকু (কাঁধে ঝোলানো ক্যামেরাসহ)। তাঁদের অনেকের মুখে তরুণতা, চোখে স্বপ্ন, আর গায়ে একরাশ নির্ভেজাল বন্ধুত্ব। এই ছবিটি সম্ভবত সাপ্তাহিক বিচিত্রা অফিসের সামনের আঙিনায় তোলা হয়েছিল—যেখানে একসময় সাংস্কৃতিক আলোচনার উত্তাপ ছড়াতো, জমতো শিল্পসন্ধ্যা আর চিত্রনাট্যের ছক।
নব্বই দশকের এই অভিনেতারাই ছিলেন বাংলাদেশের নাট্যজগতের মৌলিক ধারার পথিকৃৎ। তাঁদের অভিনয়, কণ্ঠস্বর, উপস্থিতি—সবকিছুই হয়ে উঠেছিল সময়ের কণ্ঠস্বর। তাঁরা কেবল চরিত্রই রচনা করেননি, বরং একেকটি সময়ের গল্প বলে গেছেন দর্শকের হৃদয়ে।
আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রযুক্তির বিপ্লব ঘটেছে, নাট্যপ্রকাশের মাধ্যম বদলে গেছে। এখন ইউটিউব, ওটিটি প্ল্যাটফর্মে ছড়ানো নতুন ধারার কনটেন্ট। তবে আজও, এই ছবির দিকে তাকালে বোঝা যায়—সেই সময়ের সৃজনশীলতার মূল জ্বালানিই ছিল আন্তরিকতা, দলগত বন্ধন, এবং শিল্পকে ভালোবাসা।
নব্বইয়ের এই মুহূর্তগুলো শুধু স্মৃতিই নয়, আজকের নির্মাতাদের জন্যও এক ধ্রুব নির্দেশনা। সময় বদলেছে, রুচি বদলেছে—তবু এই মানুষগুলোর সৃষ্টির কাছে আজও আমাদের প্রণতি জানাতে হয়।
সেই প্রণতির ছবি এটা—স্মৃতির অ্যালবামে অমলিন হয়ে থাকা এক শীতল দুপুরের রঙিন ক্যানভাস।