নিউজ ডেস্ক : ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন তাকে জড়িয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা কোনো গুরুত্ব বহন করে না বলে জানিয়েছেন বর্তমান মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।
রোববার সকালে বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।
মেয়র তাপস বলেন, সাঈদ খোকন যা বলেছেন, সেটা তার ব্যক্তিগত অভিমত। এটা কোনো গুরুত্ব বহন করে না। কেউ যদি ব্যক্তিগত আক্রোশের বশবর্তী হয়ে কোনো কিছু বলে থাকেন, সেটার জবাব আমি দায়িত্বশীল পদে থেকে দেওয়াটা সমীচীন মনে করি না।
এর আগে শনিবার সকালে হাইকোর্ট এলাকায় এক মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সাবেক মেয়র সাঈদ খোকন বলেন, ‘দক্ষিণ সিটির বর্তমান মেয়র ব্যারিস্টার ফজলে নূর তাপস তার পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন। মেয়র তাপস দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে গলাবাজি করে চলেছেন। আমি তাকে বলব রাঘব বোয়ালদের মুখে চুনোপুটির গল্প মানায় না। দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন গড়তে হলে সর্বপ্রথম নিজেকে দুর্নীতিমুক্ত হতে হবে। তারপর চুনোপুটির দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।’
সাঈদ খোকন অভিযোগ করেন, ফজলে নূর তাপস দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের শত শত কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লাভ করেছেন এবং করছেন। অপরদিকে, অর্থের অভাবে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গরীব কর্মচারীরা মাসের পর মাস বেতন পাচ্ছেন না। সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প অর্থের অভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মেয়র তাপস সিটি করপোরেশন আইন ২০০৯ ২য় ভাগের ২য় অধ্যায়ের অনুচ্ছেদ ৯ (২) (জ) অনুযায়ী মেয়র পদে থাকার যোগ্যতা হারিয়েছেন।
কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ফুলবাড়িয়াসহ গুলিস্তান এলাকার বিভিন্ন দোকানের বৈধতা দিয়েছিলেন জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, ফুলবাড়িয়াসহ গুলিস্তান এলাকার বিভিন্ন দোকানদারদের বৈধতা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করার সুযোগ করে দেওয়াই ছিল আমার লক্ষ্য। ফুলবাড়িয়া মার্কেটে যে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে আমি আগেও বলেছি, এটা সম্পূর্ণভাবে অবৈধ। কারণ আদালত কর্তৃক নির্দেশিত হয়ে, ব্যবসায়ীদের বৈধকরণের আবেদন নিষ্পত্তির লক্ষ্যে আমরা করপোরেশনের বোর্ড সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আলোচিত মার্কেটগুলোর নকশা সংশোধন, বকেয়া ভাড়া আদায় সাপেক্ষে বৈধ ব্যবসা পরিচালনার অনুমতি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি। বোর্ড সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক সিটি করপোরেশনের প্রকৌশল বিভাগ নকশা সংশোধন করে এবং রাজস্ব বিভাগ সাত-আট বছরের বকেয়া ভাড়া আদায় করে ব্যবসায়ীদের বৈধভাবে ব্যবসা পরিচালনা করার অনুমতি প্রদান করে।
উচ্ছেদকে অবৈধ উল্লেখ করে ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের দাবি জানিয়ে সাঈদ খোকন বলেন, বিনা নোটিশে বুলডোজার দিয়ে হাজার হাজার বৈধ দোকান গুড়িয়ে দেওয়ায় তাদের স্বপ্ন পথে বসে গেল। বর্তমান একগুয়ে নগর প্রশাসন কোন যৌক্তিক নাগরিকের দাবির তোয়াক্কা করে না। আমি ঢাকা দক্ষিণ সিটির সাবেক মেয়র হিসেবে এই অবৈধ উচ্ছেদের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। একইসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই নিঃস্ব ও অসহায় বৈধ ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের আবেদন জানাচ্ছি। সূত্র: সমকাল