দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন ৭ জানুয়ারি সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
রোববার ইসির উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবকে পাঠানো হয়।
সেখানে বলা হয়েছে, “৭ জানুয়ারি রোববার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। নির্বাচন উপলক্ষে ভোটগ্রহণের দিন সারাদেশে সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা প্রয়োজন। নির্বাচন কমিশন ওইদিন সাধারণ ছুটি ঘোষণা করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে।”
জাতীয় নির্বাচনের দিন সারাদেশে সাধারণ ছুটি থাকে। এবার শুক্র ও শনিবারের সাপ্তাহিক ছুটির পর রোববার সাধারণ ছুটি মিলিয়ে একসঙ্গে তিন দিনের ছুটি পড়ছে।
যান চলাচলে কড়াকড়ি
ভোটের আগে-পরে তিন দিন মোটরসাইকেল চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক ও জরুরি কাজে মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে।
রোববার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়কে ভোটের দিন ও তার-আগে পরে কিছু যানবাহান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার বিষয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইসির উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়- ভোটগ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের আগের মধ্যরাত, অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি দিবাগত মধ্যরাত ১২টা পর্যন্ত ট্যাক্সি ক্যাব, পিক আপ, মাইক্রোবাস, ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকবে।
সেই সঙ্গে ৫ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে।
যাদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা শিথিল
>> আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী, প্রশাসন ও অনুমতিপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক;
>> জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহন এবং ওষুধ, স্বাস্থ্য-চিকিৎসা ও অনুরুপ কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি ও সংবাদপত্র বহনকারী সকল ধরনের যানবাহন;
>> আত্মীয়-স্বজনের জন্য বিমানবন্দরে যাওয়া, বিমানবন্দর থেকে যাত্রী বা আত্মীয়-স্বজনসহ নিজ বাসস্থানে আসা অথবা আত্মীয়-স্বজনের বাসায় ফিরে যাওয়ার জন্য ব্যবহৃত যানবাহন (টিকেট বা অনুরূপ প্রমাণ দেখাতে হবে) এবং দূরপাল্লার যাত্রী বহনকারী অথবা দূরপাল্লার যাত্রী হিসেবে স্থানীয় পর্যায়ে যাতায়াতের জন্য যে কোনো যানবাহন;
>> প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জন্য একটি, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর নির্বাচনি এজেন্ট (যথাযথ নিয়োগপত্র/পরিচয়পত্র থাকা সাপেক্ষে) এর জন্য একটি গাড়ি (জীপ, কার, মাইক্রোবাস ইত্যাদি ছোট আকৃতির যানবাহন) রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন ও গাড়িতে স্টিকার প্রদর্শন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি পাবে;
>> সাংবাদিক, পর্যবেক্ষক অথবা জরুরি কোনো কাজে ব্যবহৃত মোটর সাইকেল রিটার্নিং অফিসারের অনুমোদন সাপেক্ষে চলাচলের অনুমতি পাবে;
>> নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন সাপেক্ষে নির্বাচনি কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা/কর্মচারী অথবা অন্য কোনো ব্যক্তির জন্য মোটরসাইকেল চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে;
>> জাতীয় মহাসড়ক, বন্দর ছাড়াও আন্তঃজেলা বা মহনগর থেকে বাইরে বা প্রবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক, মহাসড়ক ও প্রধান প্রধান রাস্তার সংযোগ সড়ক বা এ ধরনের সকল রাস্তায় নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতা বিবেচনায় আরও কিছু যানবাহনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ বা শিথিলের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার/অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দিতে বলেছে ইসি।
কিছু নৌযান চলাচলে কড়াকড়ি
নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো আলাদা চিঠিতে বলা হযেছে- নির্বাচন উপলক্ষে ভোটের আগের দিন মধ্যরাত অর্থাৎ ৬ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ৭ জানুয়ারি রাত ১২টা পর্যন্ত নৌযান (নির্দিষ্ট রুটে চলাচলকারী লঞ্চ, ইঞ্জিন বোট ব্যতীত) চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
>> এ নিষেধাজ্ঞা রিটার্নিং অফিসারের অনুমতি সাপেক্ষে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী/তাদের নির্বাচনি এজেন্ট, দেশি/বিদেশি পর্যবেক্ষকদের (পরিচয়পত্র থাকতে হবে) ক্ষেত্রে শিথিলযোগ্য।
>> সেই সঙ্গে নির্বাচনের সংবাদ সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত দেশি/বিদেশি সাংবাদিক (পরিচয়পত্র থাকতে হবে), নির্বাচনের কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তা-কর্মচারী, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, নির্বাচনের বৈধ পরিদর্শক এবং অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ, গ্যাস, ডাক, টেলিযোগাযোগ– ইত্যাদি কার্যক্রমে ব্যবহারের জন্য নৌযান চলাচলের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
>> প্রধান প্রধান নৌ-পথে বন্দর ও জরুরি পণ্য সরবরাহসহ অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিষেধাজ্ঞা শিথিলের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে পারবে।
>> যেখানে ভোটার ও জনসাধারণের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌ-যান, সেখানে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে না।
নিষেধাজ্ঞা আরোপ অথবা নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা ক্ষেত্রমত মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার/অন্যান্য কর্তৃপক্ষকে ক্ষমতা দিতে বলেছে ইসি।