✍️ হুমায়ুন কবির চৌধুরী
বিশ টাকার নোটে মন্দির নয়, মুসলিম স্থাপত্যের গৌরব — ষাট গম্বুজ মসজিদ
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক বিতর্ক লক্ষ করা যাচ্ছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা বিশ টাকার নোটে একটি হিন্দু মন্দিরের ছবি রয়েছে। এই ভুল ধারণা থেকে শুরু হয়েছে নানা মন্তব্য ও বিভ্রান্তি। অথচ বাস্তবতা হলো, ওই ছবিটি বাংলাদেশের ঐতিহাসিক এবং ইসলামি স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন — ষাট গম্বুজ মসজিদ।
📍 যা দেখা যাচ্ছে নোটে — মসজিদ, মন্দির নয়
বিশ টাকার নোটে যে লাল ইটের স্থাপনাটি দেখা যায়, সেটি খুলনার বাগেরহাটে অবস্থিত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ, ষাট গম্বুজ মসজিদ। এটি কোনো মন্দির নয়। এটি মুসলিম শাসনামলের একটি আধ্যাত্মিক ও স্থাপত্যিক নিদর্শন, যার নির্মাতা ছিলেন খ্যাতিমান সুফি সাধক খান জাহান আলী (১৫শ শতক)।
🕌 ষাট গম্বুজ মসজিদ: ইতিহাস ও বৈশিষ্ট্য
নির্মিত হয়েছে মূলত ১৪৪২–১৪৫৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে।
স্থাপনাটিতে রয়েছে ৭৭টি গম্বুজ, যার মধ্যে মূল ৬০টি গম্বুজের জন্যই এর নাম হয়েছে ‘ষাট গম্বুজ মসজিদ’।
চার কোণে চারটি টাওয়ার (বুরুজ) এবং বেশ মোটা দেয়াল ও অর্ধবৃত্তাকার খিলান বিশিষ্ট।
সম্পূর্ণ মসজিদটি লাল ইট দিয়ে তৈরি — এই কারণে অনেকেই এটিকে মন্দির মনে করেন।
🏛️ বিশ টাকার নোটে কেন এই মসজিদ?
বাংলাদেশ ব্যাংক দেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও স্থাপত্যরীতি তুলে ধরতেই এই মসজিদটিকে বেছে নিয়েছে। ইউনেস্কো কর্তৃক ঘোষিত World Heritage Site হওয়ায় এবং দেশের অন্যতম প্রাচীন মসজিদ হিসেবে এর গুরুত্ব অনস্বীকার্য।
❌ ভুল ধারণা ছড়ানো থেকে বিরত থাকুন
বর্তমান সময়ে যাচাই না করে তথ্য শেয়ার করাটা খুব সাধারণ অভ্যাস হয়ে উঠেছে। অথচ ইতিহাস বিকৃত করে যেকোনো ধর্মীয় বা ঐতিহাসিক স্থাপনাকে ভিন্ন রূপে উপস্থাপন করা শুধু সমাজে বিভ্রান্তি নয়, জাতির ঐতিহ্যকেই অপমান করা।
✅ সঠিক তথ্য জানুন ও ছড়ান
ষাট গম্বুজ মসজিদ আমাদের ইসলামী ঐতিহ্যের গৌরব। নোটে এই মসজিদের ছবি আমাদের ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক পরিচয়ের অংশ হিসেবে গণ্য হওয়া উচিত। একে ভুলভাবে মন্দির বলে প্রচার না করে — আমরা যেন সত্য ইতিহাস জানি, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জানাই।
—
📢 71times.com বরাবরের মতোই ঐতিহাসিক সত্য ও গণসচেতনতা তৈরিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিভ্রান্তির বদলে ইতিহাস জানতে, বুঝতে ও ছড়াতে আমাদের সঙ্গে থাকুন।