“ম্যাগনেটিক পিলার” নিয়ে গুজব: বাস্তবতা কী বলছে?
স্টাফ রিপোর্টার | শিক্ষক বাতায়ন সূত্রে
সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে “ম্যাগনেটিক” নামে পরিচিত পুরনো ধাতব পিলার নিয়ে নতুন করে গুজব ছড়িয়ে পড়েছে। কেউ কেউ দাবি করছেন, বৃটিশ আমলে এই পিলারগুলো বিশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্থাপন করা হয়েছিল, যা বজ্রপাত থেকে মানুষকে রক্ষা করত এবং একইসঙ্গে গোপন তথ্য সংগ্রহের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহৃত হতো।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই দাবিগুলোর পেছনে কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। ইতিহাসবিদদের মতে, বৃটিশ শাসনামলে ভূমি জরিপ ও সীমানা চিহ্নিত করার লক্ষ্যে লোহা, তামা বা ব্রাস (পিতল) দিয়ে তৈরি পিলার স্থাপন করা হয়েছিল। এগুলো স্রেফ চিহ্ন পিলার, এর সঙ্গে চৌম্বকীয় শক্তি বা ফ্রিকোয়েন্সি সংক্রান্ত প্রযুক্তির কোনো সম্পর্ক নেই।
এদিকে, স্থানীয়ভাবে ছড়িয়ে পড়া গুজবের কারণে অসাধু একটি চক্র এই পিলারগুলোকে “মহামূল্যবান ধাতু”র উৎস হিসেবে প্রচার করছে। ফলে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ঐতিহাসিক এসব পিলার চুরি হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিশেষজ্ঞদের মতে, বজ্রপাত রোধে যে প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, তা একেবারেই ভিন্ন। যেমন—লাইটনিং অ্যারেস্টর বা বজ্রনিরোধক যন্ত্র, যা সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক নকশায় তৈরি হয়।
প্রকৌশলী মো. আরিফ হোসেন বলেন, “এই ধরনের পিলারে চুম্বকীয় শক্তি থাকার কোনো সম্ভাবনা নেই। এগুলো শুধু জরিপ ও প্রশাসনিক কাজের জন্য ব্যবহৃত হতো।”
গুজব ঠেকাতে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। একই সঙ্গে, প্রাচীন এসব নিদর্শন রক্ষা এবং গবেষণার জন্য যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
শেষ কথা:
ইতিহাস ও বিজ্ঞান উপেক্ষা করে প্রচারিত গুজবের কারণে দেশে মূল্যবান প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হারিয়ে যাচ্ছে। গুজবে কান না দিয়ে সত্য তথ্য জানুন, দেশীয় ঐতিহ্য রক্ষায় ভূমিকা রাখুন।