যুক্তরাষ্ট্রকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করে জন অসন্তোষ সৃষ্টির মাধ্যমে দেশবিরোধী গোষ্ঠী ক্ষমতায় যেতে চায় : বিএইচপি

মোঃ মুজাহিদুল ইসলামঃ

সরকার উৎখাতের জন্য দেশবিরোধী গোষ্ঠী শতকোটি টাকার পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে নেমেছে। পরিকল্পনার প্রধান এজেন্ডা হলো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে তোলা এবং বাংলাদেশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিপক্ষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুকুলে বাংলাদেশের সার্বভৌত্ব বিরোধী সামরিক চুক্তি সম্পাদন করা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক চুক্তি বাস্তবায়নে নেপথ্যে কাজ করছেন প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে দেশে-বিদেশে বেশকিছু রাজনীতিক, কুটনৈতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সুশিল সমাজের কিছু সদস্য। দেশবিরোধী গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশকে সামরিক চুক্তিতে আবদ্ধ এবং কারসাজির করে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি অব্যাহত রেখে জনঅসন্তোষ সৃষ্টির মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চায়। তারা যার যার অবস্থান থেকে সরকার উৎখাতের লক্ষ্য নিয়ে বিরতিহীনভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তাদের এই অপতৎপরতার ফলে সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জনগণের জন্য কলঙ্কজনক ভিসানীতি ঘোষণা করেছে।
৮ জুন ২০২৩ সকালে বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি-বিএইচপির পল্টনস্থ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢাকা জেলা শাখার নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পাটির মহাসচিব ড. সুফি সাগর সামস্ উপরোক্ত কথাগুলো বলেন। সভায় সভাপত্বি করেন, জেলা শাখার আহবায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আবদুল মান্নান।
বিএইচপি মহাসচিব আরো বলেন, প্রতিদিন পাগলা ঘোড়ার মতো নিত্যপণ্যের দাম বেড়েই চলেছে। কিছুতেই থামছে না এবং থামানো যাচ্ছে না। সীমাহীন কষ্টে পড়েছে নিন্ম আয়ের মানুষ। জীবন চালাতে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে তিন বেলার খাদ্য কমিয়ে দিয়েছেন। আধাপেট খাচ্ছেন। খাদ্যতালিকা থেকে বাদ দিয়েছেন আমিষ। অপুষ্টিতে ধুকে ধুকে মরছে সাধারণ মানুষ। অপুষ্টি নিয়ে জন্ম নিচ্ছে নবজাতক শিশু। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিন চলতে থাকলে সরকারের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ চরম আকার ধারণ করবে। ষড়যন্ত্রমূলকভাবে নিত্যপণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বাস্তবে পণ্যের মূল্য যতটা বেড়েছে, বিক্রি হচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে।
সুফি সামস্ বলেন, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিরুদ্ধে সরকারের পক্ষে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে দোষী ব্যবসায়ীদের জরিমানা করে কিছু করতে পারছে না। ব্যবসায়ীরা জরিমানা পরিশোধ করছেন এবং পূর্বের ভূমিকায় অটল থাকছেন। যেন কিছুই হয়নি। তারা বারবার জরিমানা দিচ্ছেন। তারা জরিমানা পরিশোধ করছেন আর রহস্যের হাসি হাসছেন। ভাবখানা এমন যেন কতবার আর কত টাকা জরিমানা করবে মোবাইল কোর্ট। জরিমানা পরিশোধ কোন ব্যাপার নয়। তাদের হাসি সাক্ষ্য দেয় যে, তারা যুক্তিসঙ্গত কারণে দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রয় করছেন না। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করে বিক্রয় করছেন। এই ব্যবসায়ীদের অর্থের উৎস কোথায়? রহস্যটা কী?
বিএইচপি মহাসচিব আরো বলেন, বাড়তি দামের জন্য ব্যবসায়ীরা আমদানি ও পরিবহন খরচ বৃদ্ধিকে দুষলেও মূল কারণ আমদানি ও পরিবহণ খরচ বৃদ্ধি নয়। মূল কারণ হলো, সরকার উৎখাতের জন্য দেশবিরোধী গোষ্ঠীর শতকোটি টাকার প্রভাব। তাদের সরকার উৎখাতের অন্যতম পরিকল্পনা হলো, অসৎ ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দিয়ে বাজার অস্থির করে তোলা। সরকারের বিরুদ্ধে জনগণকে ক্ষেপিয়ে তোলা। জনঅসন্তোষ তৈরি করা। সরকার উৎখাতে দেশবিরোধী গোষ্ঠীর বাজেটের শতকোটি টাকার অংশ হতে অসৎ ব্যবসায়ীদের মোটা অংকের টাকা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা থেকে দোষী ব্যবসায়ীরা মোবাইল কোর্টের জরিমানা পরিশোধ করেন। এজন্য দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকারী ব্যবসায়ীরা মোবাইল কোর্টের জরিমানার টাকা পরিশোধ করার বিষয়টি তোয়াক্কা করেন না। তারা স্বাচ্ছন্দে মোবাইল কোর্টের জরিমানা পরিশোধ করেন।
পরিশেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ্য করে বিএইচপি মহাসচিব বলেন, সরকারী দলের ভেতর ঘাপটি মেরে থাকা অসৎ ব্যবসায়ীদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে আরো বেশি সতর্ক হতে হবে। অসৎ ব্যবসায়ীদের কোন ধর্ম নেই। তাদের কোন আদর্শ নেই। তাদের কোন দল নেই। সুতরাং স্বাধীনতাবিরোধী ঘরানার এই দেশবিরোধী অসৎ ব্যবসায়ী ও প্রফেসর ড. মুহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে দেশে-বিদেশে যেসব রাজনীতিক, কুটনৈতিক, ব্যবসায়ী, সাংবাদিক, মানবাধিকার কর্মী ও সুশিল সমাজের সদস্য, যারা দেশবিরোধী অপকর্মে লিপ্ত রয়েছেন তাদেরকে শক্ত হাতে দমন করতে হবে। অন্যথায়, স্বাধীনতাবিরোধী গোষ্ঠী পরিস্থিতি সরকারের নিয়ন্ত্রণের বাইরে নিয়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।
সভায় আরো বক্তব্য রাখেন, ভাইস চেয়ারম্যান, খন্দকার নাজমুল সিদ্দিকী অপু, মজিবুর রহমান চিশতী, আবদুল করিম, যুগ্ম মহাসচিব, ফররুখ খসরু, এড. মকবুল হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক, ইব্রাহিম খলিল বাদল, মোঃ রেজাউল করিম, শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক, মো. মনির হোসেন, দপ্তর সম্পাদক, মোঃ খুরশীদ আলম সরকার, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য, মোঃ আইয়ুব খান প্রমূখ নেতৃবৃন্দ।