সাংবাদিক নাদিম হত্যাকাণ্ড : এসপি ও ওসি’র ৭২ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার দাবি
মো. আলমগীর, জামালপুর।
জীবনের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসনের কোনো ধরনের পদক্ষেপ না নেওয়ায় সন্ত্রাসী হামলায় সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিম হত্যাকাণ্ডে শিকার হওয়ার দাবি করে জামালপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) নাছির উদ্দিন আহমেদ এবং বকশিগঞ্জ থানার অফিসা ইনচার্জ (ওসি) মো. সোহেল রানার ৭২ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যাহার দাবি করেছেন জামালপুর জেলার ইসলামপুর প্রেসক্লাবের সাংবাদিকবৃন্দ।
শনিবার (১৭ জুন) বেলা ১১টায় বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর প্রতিনিধি এবং একাত্তর টেলিভিশন ও দৈনিক মানবজমিন পত্রিকার বকশিগঞ্জ প্রতিনিধি সাংবাদিক গোলাম রব্বানী নাদিমের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ইসলামপুর থানা মোড় বটতলা চত্বরে ইসলামপুর প্রেসক্লাবের আয়োজনে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে এসপি ও ওসি’র প্রত্যাহারের দাবি করা হয়।
ইসলামপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোরাদুজ্জামান মোরাদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাফিজ লিটনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন দৈনিক সংবাদের সাবেক সহ-সম্পাদক ও কলামিস্ট এম কে দোলন বিশ্বাস, সাংবাদিক ফিরোজ খান লোহানী, খাদেমুল হক বাবুল, রহিমা সুলতানা মুকুল, শহিদুল ইসলাম কাজল, রোকনুজ্জামান সবুজ, সাহিদুর রহমান, কোরবান আলী, আশিকুর রহমান চায়না, মশিউর রহমান টুটুল প্রমূখ।
মানববন্ধনে সাংবাদিক এম কে দোলন বিশ্বাস বলেন, গোলাম রব্বানী নাদিম ছিলেন সত্যিকার অর্থেই একজন সৎ ও সাহসী সাংবাদিক। সত্য খবর প্রকাশ করার অপরাধে তাকে আজ সন্ত্রাসীদের হাতে প্রাণ দিতে হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে শিকার হওয়ার আগে একাধিকবার হামলার শিকার হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিড়িওতে আকুতি জানিয়ে ছিলেন সাংবাদিক নাদিম। এছাড়া বকশিগঞ্জ থানায় আবেদন করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ প্রশাসন কোনো ধরনের আইনি সহায়তা দেয়নি।
তিনি আরও বলেন, যদি সাংবাদিক নাদিমের জীবনের নিরাপত্তায় পুলিশ প্রশাসন আগে থেকেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতো, তাহলে সাংবাদিক নাদিমকে সন্ত্রাসীদের হাতে আজ প্রাণ দিতো হতো না। নাদিমের জীবনের নিরাপত্তা না দেওয়ার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারেন না পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ এবং ওসি মো. সোহেল রানা। একারণে আগামী ৭২ঘণ্টার মধ্যে ওই দুই পুলিশ কর্মকর্তার প্রত্যাহারের দাবি করছি।
উল্লেখ্য, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের জের ধরে উপজেলার সাধুরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুল আলম বাবু ক্ষিপ্ত হয়ে তার সন্ত্রাসীবাহিনী দিয়ে গত ১৪ জুন রাত ১০টার দিকে বকশিগঞ্জের পাটহাটি এলাকায় ডাচ-বাংলা ব্যাংকের বুথের সামনে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী নাদিমের ওপর নৃশংস হামলা চালায় দুর্বত্তরা। পরদিন ১৫ জুন বিকেলে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। গত শুক্রবার দুপুরে দুই দফা জানাযা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তার দাফন করা হয়। গোলাম রাব্বানী নাদিম উপজেলার নীলাখিয়া ইউনিয়নের গোমেরচর গ্রামের আবদুল করিমের ছেলে।
